Saturday, 4 August 2018

জকিগঞ্জে স্লিপের টাকায় রমরমা বাণিজ্য_ ক্ষুব্ধ এস.এম.সি ও শিক্ষক সমাজ।

স্টাফ রিপোর্টারঃ জকিগঞ্জের প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা কাজী সাইফুল ইসলাম চলতি বৎসরের জানুয়ারি মাসে অত্র উপজেলায় যোগদান করেন। জানা যায় উত্তর বঙ্গের রামপাল উপজেলা থেকে দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত হয়ে স্ট্যান্ড রিলিজে বদলী হয়ে আসেন। অত্যান্ত সুচতুর ও কৌশলী এ কর্মকর্তা যোগদান করেই বিভিন্ন কুটকৌশল শুরুকরেন। শুরুতেই শিক্ষক নেতাদের বিভাজন ও দালাল শিক্ষকদের হাত করে, অফিসের দুর্নীতিবাজ কর্মচারীদের মাধ্যমে বদলী বাণিজ্য নিরাপদে সম্পন্ন করেন। জকিঞ্জের বিভাজিত প্রাথমিক শিক্ষক সমাজ এর কোন প্রতিবাদ করতে পারেনি।  তিনি শিক্ষার উন্নয়নমূলক বিভিন্ন কাজের এজেন্টা এনে শিক্ষক সমাজকে সুকৌশলে তটস্থ রাখেন শিক্ষক নেতারা ধীরে ধীরে উনার গতি বিধি ধরতে পেরলেও ভয়ে মুখ খুলেনি। ফলে ধাপটের সাথে তিনি দুর্নীতির পথে এগিয়ে চলেন।
বিগত ২০১৭-১৮ অর্থ বছরের জুন মাসে ১৩৬টি বিদ্যালয়ের ৪০হাজার টাকা করে সরকারি বরাদ্দ আসে।  ৪৫ টি বিদ্যালয়ের নামে ১০ হাজার টাকা করে রুটিন মেরামতর কাজে বরাদ্দ আসে, ২০ টি বিদ্যালয়ের নামে ২০হাজার টাকা করে বাতরুম মেরামতের কাজে বরাদ্দ আসে। এ সকল বরাদ্দকৃত টাকা বিদ্যালয়ের নিয়মিত এস.এম.সি কমিটি নির্ধারিত কাজে ব্যয় করার বিধান ও নীতিমালা রয়েছে। কিন্তু শিক্ষা কর্মকর্তা এসব বরাদ্দের লোভ সামলাতে পারেনি। এসব বরাদ্দে ঘাড়ে ঘুষের রেইট বসিয়ে দিয়ে তা আদায় করে নেন। তিনি বরাদ্দ প্রাপ্ত বিদ্যালয়ের প্রধানদের কাছে থেকে ১০ হাজার টাকার বরাদ্দে ৫ শত টাকা, ২০ হাজার টাকার বরাদ্দে ১ হাজার টাকা করে উৎকোচ নির্ধারিত করে আদায় করেন। শুধু তাই শেষ নয়, অফিস স্টাফকে ২-৩শত টাকা করে দেওয়ার নির্দেশনা দেন এবং তা বাস্তবায়ন করেন। শিক্ষকরা সাথে সাথে প্রতিবাদ করতে না পরে তাই শিক্ষকদের বিভিন্ন ভাবে হুমকি ধামকি দেন।  বিগত মাসে ৫ম শ্রেণির মডেল টেস্ট পরীক্ষার ফিসের নামে বাণিজ্য করা হয়। সরকারি নীতিমালা ৩৫ টাকা করে ফিস আদায় করার কথা থাকলেও তিনি কোন বিদ্যালয়ে ৫০টাকা, করে আবার কোন কোন বিদ্যালয়ে ৪০ টাকা করে ফিস আদায় করান। এতে অভিভাবকরা চরম ভাবে ক্ষুব্ধ হয়। শিক্ষকদের মানসিক চাপে রাখতে ডিজিটাল হাজিরার পরামর্শ দিয়ে শিক্ষক সমাজে বিভ্রান্তি ছড়ান। সর্বশেষ স্লিপ বরাদ্দের ৪০হাজার টাকা নিয়ে ওপেন বাণিজ্য শুরু করেন।  তিনি এবং তার সহকারী কর্মকর্তাবৃন্দ  বরাদ্দ আসার সাথে সাথে শকুনি দৃষ্টি পেলে দিনরাত হিসাব কষতে থাকেন। শিক্ষকদের নিয়ে দফায় দফায় বৈঠক ভাগ বাটোয়ারা নিয়ে দর কষাকষি করতে থাকেন। সর্বশেষ সিদ্ধান্ত হয় যে, স্লিপ পরিকল্পনায় নেয়া বিভিন্ন পণ্য ক্রয়ের দায়িত্ব তাদের হাতে দিতে হবে। পণ্য গুলো হলো: ১।সাউন্ড সিস্টেম ক্রয় ২। ক্ষুদে ডাক্তারদের ১৫টি এপ্রোন ক্রয় ৩। কাব শিশুদের ১২টি করে কাব ড্রেস ক্রয়, এগুলো উনারা কিনে দিবেন। যা সরকারি বিধির সুস্পষ্ট লঙ্গন। এছাড়া শিক্ষা অফিসারকে ১হাজার টাকা করে ১৩৬টি বিদ্যালয়কে দিতে হবে।
যা অডিটের আদায় করে নেয়া হবে। নতুবা প্রতিটি বিদ্যালয় পরিদর্শন করে এর মাশুল আদায় করা হবে। শিক্ষকরা প্রথম দিকে এতে সাড়া না দেয়ায় শিক্ষা কর্মকর্তা (১৩৬টি বিদ্যালয়ের ৪০হাজার × ১৩৬ = ৫৪ লক্ষ ৪০হাজার টাকা জুন মাসে পাশ করিয়ে নিজের একাউন্টে রেখে দেন। যা সরকারি বিধান বর্হীভুত। পরবর্তীতে শিক্ষকদের সাথে দর কষাকষি সম্পন্ন হলে জুলাই মাসের ১৫তারিখর পর স্ব স্ব বিদ্যালয়ের একাউন্টে প্রেরণ করেন। একাউন্ট থেকে টাকা উত্তোলন করতে প্রধান শিক্ষকের সাথে এস.এম.সির সভাপতির যৌথ স্বাক্ষর চেকে প্রয়োজন হয়। শিক্ষকরা এস.এম.সির সভাপতির স্বাক্ষর নিয়ে টাকা তুলতে গেলে অনেক ঘোমড় ফাস হয়ে যায়। শিক্ষা কর্মকর্তাদের বাণিজ্যের ছক প্রকাশ পেয়ে যায়। বাঁধা আসে এ পক্রিয়ায়। শিক্ষকরা তাদের কর্তাদের বিষয়টি বলে। কিন্তু শিক্ষা কর্মকর্তারা না ছোড় বন্দা, তারা সভাপতিদের ম্যানেজ করে কাজ আদায় করতে হুমকি দেন। অনেক সভাপতি সরাসরি ঐ সব কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগ করে জানতে চান। শিক্ষা কর্মকর্তা বিভিন্ন ভাবে বুঝিয়ে বিষয়টি এড়িয়ে যান। শিক্ষা কর্মকর্তা তার সহকারী ও কর্মচারীদের নিয়ে রুদ্ধধার বৈঠক  করে সাহস যোগিয়ে যান। সর্বশেষ কাজে সফলও হন, ফুর ফুরা মিজাজে রমরমা বাণিজ্য হয়। শিক্ষা কর্মকর্তা দায়িত্বে ক্রয় করা হয় ১.কাব শিশুদের ড্রেস ২.ক্ষুদে ডাক্তারদের এপ্রোন, প্রতিটি বিদ্যালয়ে ১২ পিছ করে ১৩৬×১২=১৬৩২ পিছ, প্রতি পিছ এর মূল্য ৬শত টাকা করে ১৬৩২×৬০০= ৯লক্ষ ৭৯হাজার ২শত টাকা, প্রতিটি কাব ড্রেসের সর্বোচ্চ বাজার মূল্য ৪শত টাকা অথচ নেয়া হয়েছে ৬শত টাকা করে।  এতে লাভ বাণিজ্য হয়েছে ৯লক্ষ ৭৯হাজার ২শত= ৬লক্ষ ৫২হাজার ৮শত (১৬৩২×৪০০)=৩লক্ষ ২৬হাজার ৪০০ শত টাকা। ক্ষুদে ডাক্তার এপ্রোনে প্রতিটি বিদ্যালয়ে ১৫পিছ করে, ১৩৬টি ২০৪০পিছ কিনা হয়েছে। প্রতিটি বিদ্যালয় থেকে পিছ বাবদ আদায় করা হয়ছে ৩ শত টাকা করে মোট আদায় হয়ছে ৬লক্ষ ১২হাজার টাকা। এসব এপ্রোন পিছের বাজার মূল্য সর্বোচ্চ ২শত টাকা করে অথচ আদায় করা হয়েছে ৩শত টাকা করে ব্যবসা দাঁড়িয়েছে ৬লক্ষ ১২হাজার টাকা - ৪লক্ষ ৮০হাজার টাকা (২০৪০×২০০)=২লক্ষ ৪০হাজার টাকা এসব পণ্য শুধু ঢাকা গার্মেন্টস অর্ডার দিয়ে এক সাথে রেল পথে আনা হয়েছে বলে জানা যায়।
সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা ও কিছু শিক্ষকদের প্রলোবিত করে সাউন্ড সিস্টেম, হোয়াইট র্বোড, পুশপিন র্বোড,  ডিজিটাল ব্যানার, বঙ্গবন্ধুর ছবি  সহ বিভিন্ন পণ্য এক সাথে কিনায় ভাল বাণিজ্য করতে সক্ষম হয়েছেন।  এ বিষয় বিভিন্ন বিদ্যালয়ের এস.এম.সির সভাপতি গণক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যাক্ত করে বলেছেন বিধি মোতাবেক বিদ্যালয়ের উন্নয়ন বরাদ্দের কাজ পরিচালনা কমিটি করার কথা। এখানে শিক্ষা কর্মকর্তা কি হরিলুট বাণিজ্য করলেন। আমরা কমিটিতে থেকে তার এসব অনুমোদন দিব? ধ্রুর্ত শিক্ষা কর্মকর্তার সাথে পেরে উঠা গেলনা। আমার কাছে এসব ফরমের ডকুমেন্ট রয়েছে। প্রয়োজনে শো করবো। এছাড়াও শিক্ষা অফিসারের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে শিক্ষকদের জুলাই মাসের বর্ধিত বেতনের ইনক্সিমেন্ট যোগ করতে ৬০/- টাকা করে শিক্ষক প্রতি নিচ্ছেন সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তারা রমজান মাসে অনষ্টিতব্য সাব ক্লাস্টারের শিক্ষকদের সম্মানী ভাতা এখনো পরিশোধ করেনি বলে জানা যায়।

No comments:

Post a Comment

জকিগঞ্জ অনলাইন নিউজ

ভয়ংকর নারী প্রতারক জাহেদা আক্তার পপি আটক

স্টাফ রিপোর্টারঃ   জকিগঞ্জে সুলতানপুর ইউনিয়নের বাদেজমা গ্রাম থেকে স্থানীয়রা এক ভয়ংকর নারী প্রতারককে আটক করে মঙ্গলবার পুলিশের কাছে সোপর্দ ক...